ইউক্রেইনের নিপ্রো শহরে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়া একটি শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলার পর ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে, যা টানা তিন ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এ হামলায় রাশিয়া ‘ওরেশনিক’ নামে একটি নতুন ধরনের মাঝারি-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন জানান, ওরেশনিক শব্দের অর্থ হ্যাজেল ট্রি এবং এই ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের গতির চেয়ে দশ গুণ বেশি গতিতে উড়ে গেছে। এমন গতির কারণে রাডার এটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়নি। ইউক্রেইনের কর্মকর্তাদের মতে, ক্ষেপণাস্ত্রটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য বহন করছে।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা অবশ্য এমন আইসিবিএম ব্যবহারের তথ্য অস্বীকার করেছেন। তাদের মতে, এ ধরনের হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে যেত। তবে ইউক্রেইনের সামরিক গোয়েন্দারা এটিকে নতুন প্রজন্মের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যা দ্রুততার সঙ্গে নিশানায় আঘাত হানে।
রাশিয়ার পক্ষে পুতিন জানান, নিপ্রো শহরে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ছিল একটি অস্ত্র কারখানায় এবং এটি সফলভাবে নিশানা ভেদ করেছে। ইউক্রেইনের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ছয়টি ওয়ারহেড নিয়ে উড়ে গেছে এবং প্রতিটি ওয়ারহেডে ছয়টি করে ছোট বিস্ফোরক ছিল।
রাশিয়ার সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওরেশনিক সম্ভবত স্বল্প-পাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যার পাল্লা ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটি যেকোনও আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে সক্ষম এবং মাটির নিচে গভীরে থাকা বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারবে।
বিবিসি ভেরিফাইয়ের বিশ্লেষক জাস্টিন ক্রাম্পের মতে, এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেইনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাশিয়ার দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের লক্ষ্য ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা সাফল্যের হার কমানো।
এই ঘটনা রাশিয়া-ইউক্রেইন সংঘাতের নতুন একটি মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে আধুনিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।