সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে তাঁর মালিকানাধীন চিংড়িঘের থেকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাতে উপজেলার সাতহালিয়া বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় আহত ঘের মালিককে গতকাল শনিবার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সে সময় বিষয়টি জানাজানি হয়। তিনি একই গ্রামের আব্দুল মাজিদ ভাঙির ছেলে।
আহত জাকির হোসেনের (৩৬) স্ত্রী তনু খাতুনের ভাষ্য, রতনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহেদ আলী সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী এক পুলিশ কর্মকর্তার চিংড়িঘের দখল করতে তাঁর স্বামীর সহায়তার চান। এতে রাজি না হওয়ায় তিনি তাঁর ছেলে ফজলু, দুই শ্যালক কামাল ও রবিউল, ভাগনে মহব্বতসহ ১০-১২ জনের একটি দল নিয়ে গত সোমবার রাত ২টার দিকে তাদের (জাকির) ঘেরে হামলা চালান। এ সময় ঘেরের ঘর ভেঙে মোটরসাইকেলসহ তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে পরদিন সকাল ১০টার দিকে কৌশলে ‘বন্দিশালা’ থেকে বের হয়ে জাকির ফিরে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ সময় তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ওয়াহেদ আলীর বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
তনু খাতুনের দাবি, ওয়াহেদ আলী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তিন বছর আগে তিনি ফেসবুকে লাইভে এসে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় আসেন।
ভুক্তভোগী ঘের মালিক জাকির হোসেনের ভাষ্য, রাতে তুলে নেয়ার পর থেকে চোখ মুখ বেঁধে তাঁকে বেদম মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে ঘরের পেছনের দরজা খুলে তিনি পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। তিনি সাবেক চেয়ারম্যানের ১০ বিঘা জমি ‘লিজ’ নিয়ে ঘের করেছেন। ইতোমধ্যে সমুদয় ‘হারি’ পরিশোধ করা সত্ত্বেও এখন তাঁকে ঘেরে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, তাঁকে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও তাঁর ছেলে। পার্শ্ববর্তী চিংড়িঘের দখলে সহযোগিতা না করায় তাঁর সঙ্গে এমন আচারণ করা হচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাকির হোসেন জানান, জাকির হোসেন ভর্তি হওয়ার পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে এলে আঘাত নিয়ে মন্তব্য করা যাবে।
অভিযোগের বিষয়ে ওয়াহেদ আলীর দাবি, তাঁকে নিয়ে মোবাইল ফোনে খারাপ মন্তব্য করায় তিনি লোকজন নিয়ে জাকিরকে ধরে নিজ বাড়িতে আনেন। তবে ঘেরে যেতে তাঁকে বাধা দেয়া হচ্ছে না। তিনি আরও দাবি করেন, ঘের দখলের চেষ্টার অভিযোগ সত্য নয়।
কালিগঞ্জ থানার ওসি মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে এনেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।