সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশন আজ রোববার দুপুরে শপথ নেবে। সুপ্রিম কোর্টে সিইসিসহ চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ রোববার দুপুর দেড়টায় শপথ অনুষ্ঠান হতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সচিব এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন। তার বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। ১৯৫৩ সালের ১ জুলাই তার জন্ম। তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করার পর শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৭৭ সালে। দুই বছর পর ১৯৭৯ সালে বিসিএস-এ উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি। তিনি এর আগে চাকরি জীবনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকার পরে পরিকল্পনা বিভাগের সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তিনি ২০১০ সালের জুলাই মাসে অবসরে গেছেন।
তার সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমান মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তাহমিদা আহমেদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো.সানাউল্লাহ।
গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগের কথা জানানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দিয়েছেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক মাস পর বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার নির্বাচন কমিশনার। ফলে নির্বাচন কমিশনারদের শূন্যপদগুলো পূরণে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এই পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম খুঁজতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার। সেই সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সদস্য হলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম-কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য ছিলেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
এদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন গণমাধ্যমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, দায়িত্ব যখন এসেছে, আমাদের সুষ্ঠুভাবে তা পালন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সব করা হবে।
তিনি আরও বলেছেন, মানুষ যাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব।