৪০ বছর পর জনশুমারি শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত কবলিত দেশ ইরাকে।
গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে শুমারি। কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য সারা দেশে কারফিউ জারি করেছে ইরাক সরকার। ইরাকের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি ধরা হয়।
বুধ ও বৃহস্পতি - এই দুই দিনে দেশটির বাসিন্দাদের ৭০টির বেশি প্রশ্ন করা হবে৷
এক বাড়িতে কয়জন বাস করেন, বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মসংস্থান, গাড়ির সংখ্যা, এমনকি জীবনযাত্রার মান জানতে একটি বাড়িতে কী ধরনের অ্যাপ্লায়েন্স আছে, তা জানার জন্যই এ জনশুমারি।
প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার কর্মীকে জনশুমারির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা তথ্যগুলো ট্যাবলেটে লিপিবদ্ধ করবেন। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তথ্য এবং দুই মাসে পুরো ফল প্রকাশ করা হবে।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি বলেন, ‘ইরাকের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে অবদান রাখে এমন সব ক্ষেত্রে পরিকল্পনার জন্য জনশুমারি গুরুত্বপূর্ণ৷`
১৯৯৭ সালেও একবার জনশুমারি হয়েছিল। কিন্তু সেবার স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানকে বাদ রাখা হয়েছিল।
এরপর ২০০৭ সালে কয়েকবার জনশুমারির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু এর ফলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে সেই আশংকায় পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়।
এরপর ২০০৯ সালে জনশুমারির সময় মসুলে শুমারির কয়েকজন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।
শুমারি নিয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে কুর্দিস্তান। এটি এখন স্বায়ত্তশাসিত একটি এলাকা। তবে ইরাকি সরকার মনে করে এটি ফেডারেল ইরাকের অংশ।
কিন্তু বাস্তবে এলাকাটি কাদের, সেই প্রশ্নের সমাধান আছে ইরাকের ২০০৫ সালের সংবিধানে। সেখানে আদমশুমারির কথা বলা আছে। এর মাধ্যমে জানা সম্ভব হবে ঐ এলাকায় প্রকৃতপক্ষে কারা বেশি বাস করেন। আদমশুমারির ফলাফলে হয়ত এমন তথ্য বেরিয়ে আসবে, যেটি কুর্দি বা আরবদের নাও পছন্দ হতে পারে।
শুমারির ফল নিয়ে উদ্বেগ দূর করার জন্য সরকার কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, একজন ব্যক্তির ধর্ম সম্পর্কে জানা হবে, তবে তিনি শিয়া, নাকি সুন্নি, নাকি কুর্দি সেই প্রশ্ন করা হবে না।
এই উদ্যোগের কারণে এবারের জনশুমারিকে ঘিরে বিপজ্জনক কিছু হবে না বলে আশা করছেন থিংক ট্যাংক ক্রাইসিস গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের প্রোগ্রাম পরিচালক ইয়ুস্ট হিল্টারমান।