যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা ছয়টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলার অনুমোদন দেয়ার একদিনের মধ্যে এই হামলা চালায় কিয়েভ।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানায় মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এপি জানায়, ইউক্রেন ছয়টি যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে নিক্ষেপ করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহারে বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইউক্রেনের দাবি, তারা ব্রায়ানস্কে রাতের বেলায় একটি সামরিক অস্ত্র গুদামে আঘাত করেছে, তবে কী ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তা স্পষ্ট করেনি।
ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফ জানিয়েছেন, হামলাকৃত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণ এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
রুশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, রুশ সেনাবাহিনী পাঁচটি এটিএসিএমএস ভূপাতিত করেছে এবং একটি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। মিসাইলের টুকরো একটি অনির্দিষ্ট সামরিক স্থাপনায় পড়েছে বলে জানা যায়। এর ফলে আগুন লাগলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি ঘটেনি।
মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার টানা তিন দিনের হামলায় বেসামরিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সোমবার রাতে উত্তর সুমি অঞ্চলের হ্লুখিভ শহরে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসে রুশ ড্রোন শাহেদের আঘাতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ১১ জন, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরো মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে, রবিবার সুমি অঞ্চলের একটি আবাসিক এলাকায় রাশিয়ার ক্লাস্টার মিউনিশনসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ জন নিহত এবং ৮৪ জন আহত হয়। সোমবার দক্ষিণের বন্দর শহর ওডেসায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশ্য নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এই ধারাবাহিক আক্রমণ প্রমাণ করে পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী নন।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার প্রতিটি নতুন হামলা পুতিনের আসল অভিপ্রায় প্রকাশ করে। তিনি চান এই যুদ্ধ চলতে থাকুক। শান্তি আলোচনা তার কাছে কোনো গুরুত্ব বহন করে না। আমাদের শক্তি দিয়ে রাশিয়াকে একটি ন্যায্য শান্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে।