টেক জগতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের স্বত্বাধিকারী মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর বক্তব্য দিয়েছেন যে, স্মার্টফোনের যুগ হয়তো শেষ হতে চলেছে। তিনি দাবি করেছেন যে একটি নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি শিগগিরই স্মার্টফোনকে প্রতিস্থাপন করবে এবং আমাদের যোগাযোগ ও বিশ্বের সঙ্গে সংযোগের ধরণে আমূল পরিবর্তন করবে।
স্মার্টফোনের বিকল্প হিসেবে নতুন ব্যক্তিগত যোগাযোগ ডিভাইস নিয়ে আলোচনা আর কল্পনার বিষয় নয়। মেটা এবং বাইদুর স্মার্টগ্লাস প্রযুক্তি এই বিষয়ে গুরুত্ব আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
মেটা এবং বাইদুর চ্যালেঞ্জ: স্মার্টগ্লাস
মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বে মেটা এবং বাইদুর সিইও রবিন লি এআর (অগমেন্টেড রিয়েলিটি) এবং এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগ করছেন। তাদের লক্ষ্য স্মার্টগ্লাসকে পরবর্তী যুগান্তকারী ব্যক্তিগত ডিভাইস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
মেটার প্রজেক্ট ওরিয়ন: নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনা
ফেসবুক থেকে মেটা নাম ধারণের পর থেকেই সামাজিক সংযোগ প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে কোম্পানিটি। যদিও মেটা কখনো স্মার্টফোন বাজারে প্রবেশ করেনি, তবে প্রজেক্ট ওরিয়নের অধীনে তৈরি এআর চশমা নিয়ে জাকারবার্গ তাদের হার্ডওয়্যার খাতে দৃঢ় অবস্থান নিতে চান।
মেটা কানেক্ট ইভেন্টে তিনি ওরিয়ন চশমার প্রোটোটাইপ উন্মোচন করেন, যা স্মার্টফোনের প্রধান ফিচারগুলোকে ব্যবহারকারীর চোখের সামনেই উপস্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
স্মার্টফোনের বিকল্প হতে পারে স্মার্টগ্লাস?
স্মার্টগ্লাস স্মার্টফোনকে প্রতিস্থাপন করবে! এই ধারণাটি এখনো বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। প্রথমত, ডিজাইনের বিষয়টি বড় সমস্যা। উন্নত ফিচারের সঙ্গে সাধারণ ব্যবহারকারীদের আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি এখনো কঠিন।
দ্বিতীয়ত, ইন্টারফেস বা ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ এবং ব্যবহারবান্ধব হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেটা কণ্ঠস্বর এবং অঙ্গভঙ্গি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি সহজ করতে চাইছে, অন্যদিকে বাইদু এআই ব্যবহার করে ব্যক্তিগতকৃত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
জাকারবার্গ বলেছেন, স্মার্টগ্লাস স্মার্টফোনকে প্রতিস্থাপন করতে সময় লাগবে। ব্যাটারি লাইফ, ডিভাইসের ওজন এবং সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সামঞ্জস্য, এই প্রযুক্তির সামনে এখনো অনেক বাধা রয়েছে।
তবে মেটা এবং বাইদু উভয়ই এআর ও এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পশ্চিমা বাজারে মেটা এবং চীনা বাজারে বাইদুর প্রতিযোগিতা নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসবে। এই প্রতিযোগিতার ফলে ব্যবহারকারীরা সুবিধাজনক ডিজাইন ও উন্নত ফিচার পেতে পারেন।
স্মার্টফোনের বিকল্প তৈরি সম্ভব হলেও, এটি সফল করতে কোম্পানিগুলোকে ব্যবহারকারীদের বর্তমান প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যেতে হবে।তবে স্মার্টফোন থেকে স্মার্টগ্লাস প্রযুক্তি জগতের বৈপ্লবিক এই পরিবর্তন ২০৩০’র দশকেই হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মেটার স্বত্বাধিকারী।