জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ১০ মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বিচারপতিসহ ১৪ জনকে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সোমবার যাদের হাজির করা হচ্ছে তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, কামাল আহমেদ মজুমদার, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, সাবেক বিচারপতি এইচএম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। গ্রেপ্তারের পর তারা সবাই বিভিন্ন কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে ২৭ অক্টোবর এসব মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের আদেশ দিয়েছিলেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ওইদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার সব মামলার বাদী হবেন চিফ প্রসিকিউটর। আমাদের কাছে জনগণ বা ভিকটিম পরিবার যেসব নিয়ে আসে, এগুলো শুধু তথ্য। এ তথ্যগুলোকে তদন্ত সংস্থা গ্রহণ করে, পরে পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়। সেই রিপোর্ট চিফ প্রসিকিউটরের কাছে দেওয়া হলে চিফ প্রসিকিউটর কোর্টের কাছে আবেদন করেন অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যুর জন্য। আজ পর্যন্ত তিনটি মিসকেস করা হয়েছে। প্রথম মিসকেসের মধ্যে শেখ হাসিনা এবং দ্বিতীয় মিসকেসে ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের এবং তৃতীয় মিসকেসে পুলিশ সদস্যদের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রথম যখন এই মামলা করা হয়েছে আমরা অপরাধীদের নাম প্রকাশ করিনি। যাতে তারা কেউ পালিয়ে যেতে না পারে।
প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতাকে সমূলে বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তাদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এপিসি ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নিরস্ত্র সিভিলিয়ানদের হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যাই করা হয়নি, লাশগুলোকে বিকৃত ও গুম করা, জানাজা পড়তে না দেয়া, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে না দেওয়াসহ যত মানবতাবিরোধী অপরাধ আছে তারা সেগুলো করেছেন।